বাংলাদেশের ব্যাংকখাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে, দেশের ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫.৭৩ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে, একই সময় গত বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মহামারি কাটিয়ে উঠতে শুরু করা এই সময়ের মধ্যে মাত্র ৯ মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা বেড়েছে।
আজ বুধবার (২৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ব্যাংকের ঋণ খেলাপির এই মহাসংখ্যার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। বিশেষ করে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে নাম-বেনামে অত্যন্ত বড় অঙ্কের অর্থ তুলা হয়েছিল, যা এখন খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে শুরু করেছে। আরও এক কারণ হলো, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ঋণ নবায়নের নিয়ম পরিবর্তনের ফলে দেশে খেলাপি ঋণের সংখ্যা বাড়ছে। অনেক ঋণই নতুন করে নবায়ন করা হলেও, তার বেশিরভাগেরই ঋণ আদায় সম্ভব হচ্ছে না। এই সব অনিয়ম ও অপব্যবহারের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক ঋণ খেলাপি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে নিচ্ছে, ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে, দেশে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫.৭৩ শতাংশ। অন্যদিকে, গত বছরের সেপ্টেম্বরের সময় খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ে প্রায় ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। এটি দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, যা অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও ব্যাংকিং খাতের স্বচ্ছতার জন্য উদ্বেগের বিষয়।
Leave a Reply